
ওজন কমে যাওয়ার কারণ
ওজন কমে যাওয়ার কারণ
উচ্চতা অনুযায়ী সঠিক ওজন থাকা শারীরিক সুস্থতার একটি বড় লক্ষণ। সুস্থ থাকার জন্য স্বাভাবিক ওজন থাকা জরুরি। অতি ওজন আর কম ওজন—দুটিই অপুষ্টি বা ম্যালনিউট্রিশনের উপসর্গ।
যদি কারও শারীরিক ওজন অতিরিক্ত কমে যায় বা খুব দ্রুত কমে যায়, তবে তা অবশ্যই চিন্তার বিষয়। যদি স্বাভাবিক খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাপন বজায় থাকা সত্ত্বেও আপনার ওজন কমতে থাকে, তবে অবশ্যই তার কারণ খুঁজে বের করতে হবে।
কতটুকু ওজন কমলে তা চিন্তার বিষয়
যদি ৬ মাস থেকে এক বছরের মধ্যে কারও ওজন ৫ কেজি কমে যায়, তবে সেটাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় ‘সিগনিফিক্যান্ট ওয়েট লস’ বলে। এ রকম ঘটে থাকলে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
উচ্চতা অনুযায়ী ওজন ঠিক আছে কি না, তা জানতে যে পরিমাপ ব্যবহৃত হয়, তার নাম বিএমআই বা বডি মাস ইনডেক্স। ওজনকে উচ্চতার বর্গ দিয়ে ভাগ করলে এই বিএমআই পাওয়া যায়। স্বাভাবিক বিএমআই হচ্ছে ১৮ দশমিক ৫ থেকে ২৪ দশমিক ৯ পর্যন্ত। কারও বিএমআই ১৮ দশমিক ৫–এর নিচে হলে তাকে আন্ডারওয়েট বা কম ওজনবিশিষ্ট বলে ধরে নেওয়া যায়।

Reasons for weight loss
হঠাৎ ওজন কমে যাওয়ার কারণ
বিভিন্ন রোগের কারণে মানুষের ওজন হঠাৎ হ্রাস পেতে পারে। শারীরিক রোগ ছাড়াও মানসিক রোগের কারণেও কিন্তু ওজন কমতে পারে। হরমোনজনিত বিভিন্ন সমস্যা যেমন, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, হাইপারথাইরয়েডিজম, অ্যাডিসন রোগ ও প্যান হাইপোপিটুইটারিজম ইত্যাদিতে সাধারণত ওজন কমে যায়। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি সংক্রমণ, যেমন যক্ষ্মা বা টিবি রোগ, কালাজ্বর, লিভার অ্যাবসেস এবং এইচআইভি বা এইডস ওজন কমার অন্যতম কারণ।
ওজন কমে যাওয়ার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে ক্যানসার। শরীরের নানা জায়গায় ক্যানসার হতে পারে, যেমন খাদ্যনালি, পাকস্থলী, কোলন, প্যানক্রিয়াস, লিভার, পিত্তথলি, পিত্তনালি, মস্তিষ্ক, নাক, কান, গলা, থাইরয়েড, ফুসফুস, কিডনি, মূত্রথলি, বোন, রক্ত, জরায়ু, ওভারি, সারভিক্স ইত্যাদির ক্যানসার। প্রায় সব কটিতেই উল্লেখযোগ্য হারে ওজন কমতে থাকে।
মানসিক সমস্যা, যেমন গুরুতর হতাশা, অ্যানোরেক্সিয়া নারভোসা ইত্যাদিতে রোগীর খাওয়া কমে যায় আর ওজনও কমে যায়। কারও যদি খেতে বা গিলতে অসুবিধা থাকে, যেমন স্ট্রোকের পর বা বয়স্ক ব্যক্তি, ডিমেনশিয়ার রোগী—তাঁদেরও পর্যাপ্ত পুষ্টির অভাবে ওজন কমতে পারে।