
বাংলাদেশে ২০২৫ সালের রমজান শুরু হবে আগামী ১ বা ২ মার্চ। ১৪৪৬ হিজরি শাবান মাসের চাঁদ দেখা সাপেক্ষে এই তারিখ ধরে সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি প্রকাশ করেছে ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
রমজানের সেহরি ও ইফতারের সময়সূচি ২০২৫
সেহরির শেষ সময় সতর্কতামূলকভাবে সুবহে সাদিকের ৩ মিনিট আগে ধরা হয়েছে এবং ফজরের ওয়াক্ত শুরুর সময় সুবহে সাদিকের ৩ মিনিট পরে রাখা হয়েছে।
নামাজ, সেহরি ও ইফতার এর সময়সূচি ২০২৫
রোজা —মার্চ— বার— সাহরি শেষ —ফজর শুরু— ইফতারের সময়
০১— ২ মার্চ– রোববার-(৫-০৪ মি. ৫-০৫ মি.)——– ৬-০২ মি.
০২ —৩ মার্চ –সোমবার- (-৫-০২ মি. ৫-০৩ মি.) ——৬-০৩ মি.
০8— ৫ মার্চ –বুধবার—- (৫-০১ মি. ৫-০২ মি.) ——-৬-০৪ মি.
০৫- ৬ মার্চ– বৃহস্পতিবার-( ৫-০০ মি. ৫-০১ মি.)—— ৬-০৪ মি.
০৬— ৭ মার্চ –শুক্রবার—- (৪-৫৯ মি. ৫-০০ মি.) — –৬-০৫ মি.
০৭— ৮ মার্চ –শনিবার- (৪-৫৮ মি. ৪-৫৯ মি.)——— ৬-০৫ মি.
০৮— ৯ মার্চ– রোববার- (৪-৫৭ মি. ৪-৫৮ মি.) ———৬-০৬ মি.
০৯— ১০ মার্চ– সোমবার -(৪-৫৬মি. ৪-৫৭ মি.) —— -৬-০৬ মি.
১০ —১১ মার্চ– মঙ্গলবার- (৪-৫৫ মি. ৪-৫৬মি)——– ৬-০৬ মি.
১১— ১২ মার্চ– বুধবার -(৪-৫৪ মি. ৪-৫৫ মি.)————৬-০৭ মি.
১২— ১৩ মার্চ– বৃহস্পতিবার-( ৪-৫৩ মি. ৪-৫৪ মি.)—– ৬-০৭ মি.
১৩— ১৪ মার্চ– শুক্রবার- (৪-৫২ মি. ৪-৫৩ মি.) ———৬-০৮ মি.
১৪— ১৫ মার্চ –শনিবার- (৪-৫১ মি. ৪-৫২ মি.)———–৬-০৮ মি.
১৫— ১৬ মার্চ– রোববার-(৪-৫০ মি. ৪-৫১ মি.)———- ৬-০৮ মি.
১৬— ১৭ মার্চ– সোমবার-( ৪-৪৯মি. ৪-৫০ মি.) ———-৬-০৯ মি.
১৭— ১৮ মার্চ– মঙ্গলবার- (৪-৪৮ মি. ৪-৪৯মি.)———- ৬-০৯ মি.
১৮— ১৯ মার্চ– বুধবার- (৪-৪৭ মি. ৪-৪৮ মি.) ————৬-১০ মি.
১৯— ২০ মার্চ–বৃহস্পতিবার- (৪-৪৬ মি. ৪-৪৭ মি.) ——-৬-১০ মি.
২০— ২১ মার্চ– শুক্রবার- (৪-৪৫মি. ৪-৪৬ মি.) ——- —৬-১০ মি.
২১— ২২ মার্চ– শনিবার- (৪-৪৪ মি. ৪-৪৫মি.) ————৬-১১ মি.
২২— ২৩ মার্চ— রোববার-( ৪-৪৩ মি. ৪-৪৪ মি.) ———৬-১১ মি.
২৩— ২৪মার্চ– সোমবার- (৪-৪২ মি. ৪-৪৩ মি.) ———-৬-১১ মি.
২৪— ২৫ মার্চ– মঙ্গলবার- (৪-৪১মি. ৪-৪২ মি.) ———-৬-১২মি.
২৫— ২৬ মার্চ– বুধবার- (৪-৪০ মি. ৪-৪১মি.) ————৬-১২মি.
২৬— ২৭ মার্চ– বৃহস্পতিবার- (৪-৩৯ মি. ৪-৪০ মি )——৬-১৩মি.
২৭— ২৮মার্চ– শুক্রবার- (৪-৩৮ মি. ৪-৩৯ মি.) ———৬-১৩মি.
২৮— ২৯মার্চ– শনিবার– (৪-৩৬ মি. ৪-৩৮ মি. )——–৬-১৪মি.
২৯— ৩০ মার্চ– রোববার– (৪-৩৫ মি. ৪-৩৬ মি)——–৬-১৪মি.
৩০— ৩১ মার্চ– সোমবার– (৪-৩৪ মি. ৪-৩৫ মি.) ——-৬-১৫মি.
আরো জানুন : রমজান মাস জুড়ে আপনার করণীয় কি ?

সাহ্রির ফজিলত ও বরকত
রোজার অতি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম অনুষঙ্গটি হলো সাহ্রি। সাহ্রি শব্দের অর্থ শেষ রাতের খাবার। ইসলামি পরিভাষায় রোজা বা সাওম পালনের উদ্দেশ্যে ভোররাতে সুবহে সাদিকের আগে যে আহার গ্রহণ করা হয়, তাই সাহ্রি। সাহ্রি শব্দটিকে স্থানীয়ভাবে ‘সেহরি’ বা ‘সেহেরি’ বলতে শোনা যায়।
সাহ্রি একটি বরকতময় ও ফজিলতপূর্ণ সুন্নাত। তাকওয়া অর্জন এবং আধ্যাত্মিক উন্নয়নের জন্য এর গুরুত্ব অপরিসীম। নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা সাহ্রি খাও, কেননা সাহ্রিতে রয়েছে বরকত।’ (বুখারি, হাদিস: ১৮০১)। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘আমাদের রোজা আর আহলে কিতাবদের রোজার মধ্যে পার্থক্য হলো সাহ্রি খাওয়া আর না খাওয়া।’ (মুসলিম, আলফিয়াতুল হাদিস, পৃষ্ঠা: ১৩১)।
Ramadan Sehri and Iftar Schedule 2025
মোল্লা আলী কারী (র.) বলেন, ‘অর্ধরাত্রি হতে সাহ্রির সময় শুরু হয়।’ (মিরকাত, মিশকাত)। ইমাম যামাখ্শারী (র.) ও ফকিহ আবুল লাঈস ছমরকন্দী (রহ.) বলেন, সাহরির সময় হলো রাতের শেষ তৃতীয়াংশ। সাহ্রি বিলম্বে খাওয়া সুন্নাত। তবে সন্দেহের সময় পর্যন্ত বিলম্ব করা যাবে না, তার আগেই সাহ্রির নিরাপদ সময়সীমার মধ্যে পানাহার শেষ করতে হবে। রাসুলে কারিম (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা সাহ্রি খাও; যদি তা এক ঢোঁক পানিও হয়।’ অন্য বর্ণনায় এসেছে, ‘তোমরা সাহ্রি খাও; যদি এক লোকমা খাদ্যও হয়।’ (মুসলিম)। অর্থাৎ যেকোনো প্রকার ও যেকোনো পরিমাণ খাদ্য বা পানীয় দ্বারাই সাহ্রির সুন্নাত পালন হবে। ইচ্ছাকৃতভাবে সাহ্রি বর্জন করা সুন্নাতের খেলাফ।
সাহ্রি রোজা রাখার জন্য সহায়ক, সাহ্রির সময় জাগ্রত হওয়া রোজার প্রতি আগ্রহের প্রকাশ। সাহ্রির সময় প্রশান্তির নিদ্রা পরিহার করে শয্যা ত্যাগ করা প্রকৃতই ইবাদত ও আনুগত্যের প্রতি অনুরাগ। এতে শেষ রাতে জাগ্রত হওয়ার অভ্যাস গড়ে ওঠে এবং তাহাজ্জুত নামাজ আদায়ের সৌভাগ্য লাভ হয়। সাহ্রির সময় জাগ্রত হওয়া একপ্রকারের মুজাহাদা বা সাধনাও বটে। এ সময় আল্লাহর রহমত নাজিলের সময়, অগণিত আল্লাহপ্রেমিকের ফরিয়াদ ও দোয়া কবুলের সময়, আল্লাহর নৈকট্য লাভের সবচেয়ে উত্তম সময়। যাঁরা এ বরকতময় সময় জাগ্রত হয়ে আল্লাহর মহান দরবারে দোয়া করে থাকেন এবং ইস্তিগফার করেন, আল্লাহ তাঁদের স্বীয় ভালোবাসায় ধন্য করেন। এ ধরনের আল্লাহপ্রেমিকদের লক্ষ করে পবিত্র কোরআনুল কারিমে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ঘোষণা করেন, ‘তারা (মুমিনগণ) রাত্রির শেষ অংশে আল্লাহর নিকট ইস্তিগফার (ক্ষমা প্রার্থনা) করে থাকে।’ (সুরা-৫১ জারিয়াত, আয়াত: ১৮)।
সাহ্রির বরকতময় ও কল্যাণকর বিভিন্ন দিক রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো: সুন্নাতের অনুসরণ করা, ইসলামের স্বাতন্ত্র্য রক্ষা করা, ইবাদতের জন্য শক্তি সঞ্চয় করা এবং তাকওয়া অর্জন করা। স্বাস্থ্য ও মনের অধিক প্রফুল্লতা লাভ করা, ক্ষুধার তাড়নায় সৃষ্ট প্রবৃত্তির বাসনা নিরাময় করা। সাহ্রির সময় দোয়া কবুল হয়। সাহ্রির সময় অধিক পরিমাণে জিকির–আসকার করা এবং তাহাজ্জুত আদায় ও দোয়া মোনাজাত করা।
ইফতারের ফজিলত
রমজান রহমত-বরকতের মাস। এ মাসে প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেক মুসলমান নর-নারীর ওপর রোজা রাখা ফরজ। রোজা রাখার পর যে খাবারের সমাপ্তি হয় এটাকে ইফতার বলে। ইফতারের রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত।
রোজা শেষে নবী (সা.) ইফতার করতেন। সাহাবায়ে কেরাম ইফতার করতেন। আলকামা ইবনে সুফিয়ান ইবনে আবদুল্লাহ সাকাফি স্বীয় পিতা থেকে বর্ণনা করেন, ‘আমরা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে রাসুল (সা.)-এর সাক্ষাতের জন্য আসতাম। তিনি আমাদের জন্য মুগিরা ইবনে শোয়ার ঘরের পাশে দুইটি তাঁবু টানিয়ে দিতেন। বেলাল (রা.) আমাদের কাছে ইফতার নিয়ে আসতেন। আমরা জিজ্ঞেস করতাম, বেলাল, রাসুল (সা.) ইফতার করেছেন? বেলাল (রা.) বলতেন, হ্যাঁ, আমি তোমাদের কাছে রাসুল (সা.)-এর ইফতার করার পরই এসেছি এবং আমরাও খেয়ে এসেছি।’ (আল মুজামুল কাবির লিত-তাবরানি, হাদিস : ৪২০০)
সারা দিন রোজা রাখার পর রোজাদারের জন্য ইফতারের মুহূর্তটা পরম আনন্দের। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী কারিম (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ। একটি আনন্দ হচ্ছে যখন সে ইফতার করে। আরেকটি হচ্ছে যখন সে প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৭৬৬)