Status

লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস

লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস- এ রাতের ইবাদত হাজার মাসের ইবাদতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। রোজার মাস জুড়ে বিশেষত শেষ দশকে কদরের রাত খোঁজা মোস্তাহাব; আরও নির্দিষ্ট করে বললে, শেষ দশকের বিজোড় রাত ২১, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৯তম রাতে। বুখারি ও মুসলিমের বর্ণনায় এসেছে, নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমরা রোজার শেষ দশকের বিজোড় রাতে শবে কদরের সন্ধান কর ।

লাইলাতুল কদর সম্পর্কে হাদিস

লাইলাতুল কদর বা শবে কদর করুণাময় রবের পক্ষ থেকে মুমিন বান্দার জন্য বিশেষ পুরস্কার। এই রাত স্বল্প সময়ে অসংখ্য সওয়াব অর্জন করে নেওয়ার রাত। এই মহা নিয়ামত আল্লাহ তাআলা একমাত্র উম্মতে মুহাম্মদিকেই দান করেছেন। অন্য কোনো নবীর উম্মতকে এ সুযোগ দান করেননি। এ রাতে আল্লাহর আদেশে ফেরেশতারা রহমত, কল্যাণ ও বরকত নিয়ে পৃথিবীতে অবতরণ করেন।

মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনে এ রাতের নামেই একটি সুরা অবতীর্ণ করেছেন। এ রাতের ফজিলতের জন্য এটাই যথেষ্ট। অন্য কোনো ফজিলত না থাকলেও এতটুকুই এই রজনীর শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করে।

এ রাত সম্পর্কে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আমি আল-কোরআন নাজিল করেছি কদরের রাতে। আপনি কি জানেন, কদরের রাত কী? কদরের রাত হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।’ (সুরা : কদর, আয়াত : ১-৩)

শবে কদরের তারিখ

শবেকদর নির্দিষ্টকরণে অনেক মতামত রয়েছে। সবচেয়ে অগ্রগণ্য মত হচ্ছে, মহিমান্বিত এই রাতকে আল্লাহ তাআলা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতে সুপ্ত রেখেছেন। তিনি এটাকে সুনির্দিষ্ট করেননি। রাসুল (সা.) রমজানের শেষ দশকে এ রাতের অনুসন্ধান করতে বলেছেন। আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, তোমরা রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতে শবেকদর অনুসন্ধান করো। (বুখারি, হাদিস : ২০১৭)

কিছু বর্ণনার ভিত্তিতে এ রাত রমজানের শেষ সাত দিনে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। রাসুল (সা.) এক হাদিসে বলেছেন, যে ব্যক্তি শবেকদর অন্বেষণ করতে চায়, সে যেন রমজানের শেষ সাত রাতের মধ্য তা অন্বেষণ করে। (বুখারি, হাদিস ২০১৫; মুসলিম, হাদিস : ১১৬৫)

শবেকদর সম্পর্কে বেশির ভাগ আলেম বলেছেন, ২৭তম রাতেই শবেকদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। উবাই ইবনে কাব (রা.) বলেন, আল্লাহর শপথ করে বলছি, আমি যত দূর জানি রাসুল (সা.) আমাদের যে রাতকে শবেকদর হিসেবে কিয়ামুল্লাইল করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন, তা হলো রমজানের ২৭তম রাত। (মুসলিম, হাদিস : ৭৬২)

আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কদরের রাত অর্জন করতে ইচ্ছুক, সে যেন তা রমজানের ২৭তম রাতে অনুসন্ধান করে। (মুসনাদ আহমাদ : ২/১৫৭)

যে রাতটি লাইলাতুল কদর হবে সেটি বুঝার কি কোন আলামত আছে?

১) রাতটি গভীর অন্ধকারে ছেয়ে যাবে না।

(২) নাতিশীতোষ্ণ হবে। অর্থাৎ গরম বা শীতের তীব্রতা থাকবে না।

(৩) মৃদুমন্দ বাতাস প্রবাহিত হতে থাকবে।

(৪) সে রাতে ইবাদত করে মানুষ অপেক্ষাকৃত অধিক তৃপ্তিবোধ করবে।

(৫) কোন ঈমানদার ব্যক্তিকে আল্লাহ স্বপ্নে হয়তো তা জানিয়েও দিতে পারেন।

(৬) ঐ রাতে বৃষ্টি বর্ষণ হতে পারে।

(৭) সকালে হালকা আলোকরশ্মিসহ সূর্যোদয় হবে। যা হবে পূর্ণিমার চাঁদের মত।

শবে কদরের আমল

রমজানের শেষ দশকে লাইলাতুল কদর পাওয়ার আশায় এ আমলগুলো করা যায়। তা হলো—

১. নফল নামাজ পড়া।

২. মসজিদে ঢুকেই দুই রাকাত দুখুলিল মাসজিদ নামাজ পড়া।

৩. দুই দুই রাকাত করে মাগরিবের পর আউওয়াবিনের নামাজ পড়া।

৪. রাতে তারাবির নামাজ পড়া।

৫. শেষ রাতে তাহাজ্জুদ নামাজ পড়া।

৬. সম্ভব হলে সালাতুত তাসবিহ পড়া।

৬. তাওবার নামাজ পড়া।

৭. সালাতুল হাজাত পড়া।

৮. অন্যান্য নফল নামাজ বেশি বেশি পড়া।

৯. কোরআন তিলাওয়াত করা।

১০. দরুদ শরিফ পড়া।

১১. তাওবা-ইস্তিগফার পড়া।

১১. জিকির-আজকার করা।

১২. পরিবার-পরিজন, বাবা-মা ও মৃতদের জন্য দোয়া করা।

আরো জানুন : রমজান মাস জুড়ে আপনার করণীয় কি ?

Facebook page link 

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button