আন্তর্জাতিক খবর

রাশিয়ার প্রতি সম্পূর্ণ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি কিমের

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন বলেছেন, তার দেশ রাশিয়ার সেনাবাহিনীকে ‘পূর্ণভাবে সমর্থন’ করবে। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা কেসিএনএ জানিয়েছে, ‘ভ্রাতৃত্ববোধের দায়িত্ব’ হিসেবে রাশিয়াকে সমর্থন করবে উত্তর কোরিয়া। এর আগে বুধবার বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত সামরিক কুচকাওয়াজে চীন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার নেতাদের প্রথম প্রকাশ্যে একসঙ্গে দেখা যায়। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের আনুষ্ঠানিক আত্মসমর্পণের দিনটি সাড়ম্বর উদ্‌যাপন করছে চীন। দিনটিকে ঘিরে বুধবার চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করা হয়।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের পাশে দাঁড়িয়ে সামরিক প্যারেডে অংশ নেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও কিম জং উন। পরে আলাদা বৈঠক করেন নেতারা।

কিম জং উনের সঙ্গে বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ককে ‘বিশেষ’ বলে উল্লেখ করেছেন পুতিন।

কেসিএনএ আরও জানিয়েছে, ‘কমরেড কিম জং উন এবং প্রেসিডেন্ট পুতিন গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয় নিয়ে খোলামেলা মতবিনিময় করেছেন।’

রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের ছবিতে দেখা গেছে, কিম হাস্যোজ্জ্বল মুখে পুতিন ও শির পাশে দাঁড়িয়ে আছেন বা হাঁটছেন। রাষ্ট্রীয় সংবাদপত্র রোদং সিনমুনের বৃহস্পতিবারের সংস্করণে প্রধানভাবে কিমের সফরের বিষয়টি প্রকাশিত হয়েছে।

কিমের বেইজিং সফর তাকে প্রথমবার পুতিন ও শির সঙ্গে একসাথে সাক্ষাৎ করার সুযোগ দিয়েছে। পাশাপাশি ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া ২০টিরও বেশি অন্যান্য রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে মেলামেশা করার সুযোগও মিলেছে।

বিশ্লেষকরা বুধবারের এই অভূতপূর্ব বৈঠককে উত্তর কোরিয়ার নেতার জন্য বড় ধরনের প্রোপাগান্ডা জয় হিসেবে মূল্যায়ন করছেন।

রাশিয়ার প্রতি সম্পূর্ণ সমর্থনের প্রতিশ্রুতি কিমের

অবশ্য বৃহস্পতিবার কিম কোথায় আছেন তা স্পষ্ট নয়।

পাকিস্তানে রাজনৈতিক সমাবেশের কাছে বোমা বিস্ফোরণ, নিহত বেড়ে ১৫

কেসিএনএ আরও জানিয়েছে, পুতিন উত্তর কোরিয়ার সৈন্যদের ইউক্রেনের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ‘উচ্চ প্রশংসা’ করেছেন। দুই দেশের সম্পর্ককে ‘বিশ্বাস, বন্ধুত্ব ও মৈত্রীপূর্ণ বিশেষ সম্পর্ক হিসেবে উল্লেখ করেছেন তিনি।

কেসিএনএ’র বরাতে বলা হয়েছে, কিম এবং পুতিন অংশীদারত্বের দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছেন এবং দুই দেশের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করার দৃঢ় ইচ্ছা পুনরায় নিশ্চিত করেছেন।

উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার যুদ্ধে মস্কোকে সমর্থন দিতে সেনা, গোলাবারুদ এবং ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা এই সপ্তাহে অনুমান করেছে যে রাশিয়ার পক্ষে লড়াই করার জন্য পাঠানো প্রায় ২ হাজার উত্তর কোরীয় সেনা নিহত হয়েছেন।

সংস্থা মনে করে, উত্তর কোরিয়া আরও ৬ হাজার সেনা মোতায়েনের পরিকল্পনা করছে, যার মধ্যে প্রায় ১ হাজার যুদ্ধসৈন্য ইতোমধ্যে রাশিয়ায় অবস্থান করছে।

বৈঠক শেষ হওয়ার পর কিমের একজন সহকারীকে চেয়ার ও পাশে থাকা টেবিল পরিষ্কার করতে দেখা গেছে। বিশ্লেষকদের মতে, নিরাপত্তা ব্যবস্থার জন্য এটা করা হয়েছে, যাতে অন্যান্য দেশ, এমনকি বন্ধুরাষ্ট্রও তার স্বাস্থ্য সংক্রান্ত তথ্য খুঁজে বের করতে না পারে।

গত বছর দুই নেতা একটি পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। চুক্তি অনুযায়ী, কোনও পক্ষ সশস্ত্র হামলার শিকার হলে অপর পক্ষ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button