উত্তর ভারত ও পাকিস্তানে নতুন বন্যার আশঙ্কা

উত্তর ভারত ও পাকিস্তানে নতুন বন্যার আশঙ্কা
হিমালয় পর্বতমালায় ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে উত্তর ভারত এবং প্রতিবেশী পাকিস্তানে বন্যা অব্যাহত রয়েছে। ভারী বর্ষণে বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) প্রধান নদীগুলো প্লাবিত হওয়াও নতুন করে বন্যার কবলে পড়েছে দেশ দুটির ওই অঞ্চলগুলো। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
বন্যায় নতুন করে উত্তর ভারত ও পাকিস্তানের ওই অঞ্চলের ঘরবাড়ি এবং মহাসড়কগুলো ডুবে গেছে।
যদিও ভারতের আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, দিনের পরবর্তী সময় বর্ষণ কিছুটা কমতে পারে। তবে পাকিস্তান সতর্ক করে জানিয়েছে, ভারী বর্ষণ আগামী ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলতে পারে।
চলতি বছর তীব্র বর্ষা মৌসুম এই অঞ্চলে ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ ডেকে এনেছে। পাকিস্তানে এই মৌসুমে ৮৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভারতে বন্যায় শুধু আগস্ট মাসেই প্রায় ১৫০ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
প্রবল বর্ষণে বহু নদীর পানির স্তর বেড়ে গেছে। ফলে ভারতের কর্তৃপক্ষ পানি নিয়ন্ত্রণের জন্য তৈরি করা কৃত্রিম বাঁধ বা ড্যাম থেকে অতিরিক্ত পানি ছেড়ে দিয়েছে, যা সীমান্তের দুই পাশে বন্যা সৃষ্টি করেছে।
পাকিস্তানের প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক ইরফান আলী কাঠিয়া বৃহস্পতিবার রয়টার্সকে বলেন, ভারতের ড্যাম থেকে অতিরিক্ত পানি ছাড়ার কারণে পাকিস্তানে তিনটি নদী প্রভাবিত হয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র ও জলসম্পদ মন্ত্রণালয় এখনও রয়টার্সের মন্তব্যের অনুরোধের কোনও জবাব দেয়নি।
দুই দেশের সীমান্ত সংলগ্ন অঞ্চলগুলো তাদের ধানক্ষেতের জন্য পরিচিত,যা দুই দেশেই পাঞ্জাব নামে পরিচিত। এই অঞ্চল এবার বছরের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বন্যার মুখোমুখি হয়েছে।
ভারতের পাঞ্জাবে আগস্টের শুরু থেকে ৩৭ জন নিহত হয়েছেন এবং বর্ষণে লক্ষাধিক হেক্টর ফসল ধ্বংস হয়েছে। রাজ্য সরকার জানিয়েছে, তারা ৭১০ মিলিয়ন রুপি (৮ মিলিয়ন ডলার) বন্যা ত্রাণ তহবিল দেবে।
পাকিস্তানের পাঞ্জাবে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ১.৮ মিলিয়ন মানুষকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তর করা হয়েছে। কারণ সেখানে বন্যায় প্রায় ৩,৯০০টি গ্রাম তলিয়ে দিয়েছে।
পাকিস্তান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে,ঐতিহাসিক শহর মুলতানকে বন্যা থেকে বাঁচাতে চেনাব নদীর বাঁধ ভাঙার কথা বিবেচনা করা হচ্ছে। এর ফলে শহরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় পানি ছেড়ে দেওয়া হবে,যাতে নদীর জলস্তর কমে আসে।
এদিকে ভারতের রাজধানী দিল্লিতে যমুনা নদীর পানি বিপজ্জনক স্তরে পৌঁছেছে, যা সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশন ‘চরম’ পরিস্থিতি হিসেবে বর্ণনা করেছে।
এছাড়া জম্মু-কাশ্মীর অঞ্চলের গ্রীষ্মকালীন রাজধানী শ্রীনগরের জেলম নদীর বাঁধ ভাঙার কারণে আবাসিক এলাকা প্লাবিত হয়েছে। স্থানীয় কমিশনারের মতে সেখানকার ৯ হাজার মানুষকে নিরাপদে স্থানান্তর করা হয়েছে।